জাতীয়

‘জুলাই যোদ্ধা’ সুরভী গ্রেপ্তার, ফাঁস হলো ব্ল্যাকমেইল সাম্রাজ্য

Thumbnail
0:00 / 4:09

আলোচিত ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচিত তাহরিমা জান্নাত সুরভীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার টেকপাড়া বা গোপালপুর টেকপাড়ার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। ব্ল্যাকমেইল, মামলা বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মতো গুরুতর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, তাহরিমা জান্নাত সুরভী একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূল নেতৃত্বে ছিলেন। এই চক্রটি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন, যাকে অনেকেই ‘জুলাই বিপ্লব’ হিসেবে অভিহিত করেন, সেই সময়কার মামলার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ আদায় করত। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু একটি ঘটনায় গুলশানের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চক্রটি প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, সুরভী ও তার সহযোগীরা মামলায় নাম জড়ানো, গ্রেফতার কিংবা হয়রানির ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের চাপে রাখতেন। পরে বিষয়টি ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতেন। এসব কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে চললেও সাম্প্রতিক সময়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে।

তাহরিমা জান্নাত সুরভী গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও, লাইভ ও বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। সেই পরিচিতিকেই পুঁজি করে তিনি নিজেকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে উপস্থাপন করতেন এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ জানায়, সামাজিক মাধ্যমে গড়ে তোলা এই পরিচিতি ও আন্দোলনের আবেগকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তিনি এবং তার সহযোগীরা ভয়ভীতি ও প্রভাব বিস্তার করে অর্থ আদায় করতেন। একাধিক সূত্র তাকে ‘কথিত জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবেও উল্লেখ করেছে। তার বিরুদ্ধে এর আগেও কালিয়াকৈর থানায় নাইমুর রহমান দুর্জয়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল বলে জানা গেছে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, গ্রেফতারের পর তাহরিমা জান্নাত সুরভীকে থানায় নেওয়া হয়েছে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই ঘটনা জুলাই আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে একটি অংশ যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে—এমন অভিযোগ সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এই চক্রের আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খবরের বাকি অংশ লোড হচ্ছে...

অনুগ্রহ করে 12 সেকেন্ড অপেক্ষা করুন

এটি সম্পন্ন হলে আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী পাতায় চলে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button